প্রকাশ :
২৪খবরবিডি: 'দেশে ভূমি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে—বিডিএস) জাতীয় জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে চলেছে। কারণ, এর মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের ভূমি সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদি হয়রানি ও বিপুল অর্থ ব্যয় বন্ধ করা সম্ভব হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেলো এসব তথ্য।
-ভূমি জরিপের সময় মাঠ পর্যায়ের অসৎ কর্মকর্তা ও অসাধু ব্যক্তি, দালাল কিংবা ভূমিদস্যুর যোগসাজশে ইচ্ছাকৃত অসঠিক জরিপ কিংবা নিছক অসাবধানতাজনিত ত্রুটিপূর্ণ জরিপের কারণে, প্রকৃত মালিক ব্যতীত জমি অন্য ব্যক্তির নামে কিংবা সরকারের নামে চলে গেলে তার নিষ্পত্তিতে মামলা-মোকদ্দমা চলতেই থাকে। ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূমি সংক্রান্ত মামলা ৫০-৬০ বছরেও নিষ্পত্তি হয় না। মামলা চালাতে গিয়ে অনেক পরিবার প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব মামলার সূত্রপাতের অন্যতম কারণ ভূমি জরিপের ত্রুটি। এছাড়া, প্রচলিত জরিপের আরেকটি সমস্যা দীর্ঘসূত্রতা। নানা কারণে একেকটি জরিপ শেষ হতে ২০-২৫ বছরও লেগে যায়।
-আবার, ভূমির মালিকানা ও অধিগমনের ক্ষেত্রে দরিদ্র, ভূমিহীন, প্রান্তিক, নারী ও ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কৃষিভূমি ও জলার রক্ষা ও সংস্কার প্রয়োজন। গরিব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে খাস জমি এবং চরের জমি বিতরণ; শত্রু এবং অর্পিত সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া, ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের ন্যায্য স্বার্থ নিশ্চিত করা, নারীদের জমির মালিকানা নিশ্চিত করা, বঞ্চিত জনগণের সেবা প্রদানের জন্য ভূমি আইনের ফাঁকফোকর বন্ধ করতেও নির্ভুল জরিপ প্রয়োজন। ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জরিপের দীর্ঘসূত্রতা ও হয়রানি কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে ডিজিটাল জরিপের নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয় বিডিএস নামের ক্যাডাস্ট্রাল জরিপের উদ্যোগ নেয়।
'বিডিএস ম্যাপে জমির পরিমাণ, আইলের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, আকার সম্পর্কেও জানা যাবে। এই জরিপে তৈরি ম্যাপটিতে সেন্টিমিটার পর্যায়ে ভূমি পরিমাপের নির্ভুলতা থাকবে। পরিমাপের ক্ষেত্রে ইমেজ থেকে সুবিধামতো রেফারেন্স-এর কো-অর্ডিনেটের মান ও মৌজা ম্যাপের যেকোনও প্লটের দূরত্বের মাপ ও প্লটের খতিয়ান নির্ধারিত দৈর্ঘ্য-প্রস্থ মাপ ও চার কোনার চারটি কো-অর্ডিনেট মান নিয়ে কনভেনশনাল ও আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেকোনও প্লটের পরিমাপ, ল্যান্ড ডিমার্কেশন, ল্যান্ড ডিভাইডেড করা সম্ভব হবে।
জাতীয় জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে চলেছে বিডিএস
এতে বাড়তি করে দরকার হবে না আলাদাভাবে স্থাপিত কোনও রেফারেন্স জিওডেটিক পিলার তথা জরিপের জন্য পিলার স্থাপনের। প্রচলিত ভূমি জরিপে যেখানে ২০-২৫ বছর লাগে, সেখানে খুব অল্প সময়ে বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ করা সম্ভব হবে।'
-এই জরিপ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খসড়া ম্যাপ তৈরি করে ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। যাতে জমির মালিক বিশ্বের যেকোনও স্থান থেকে তার জমির ম্যাপ দেখে জমির পরিমাণ কমবেশি হলে তাৎক্ষণিক আপত্তি দাখিল করতে পারেন। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, প্রচলিত ভূমি জরিপে যেখানে ২০-২৫ বছর লাগে, সেখানে খুব কম সময়ে বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ করা সম্ভব।